ঢাকা,মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪

মিামলার প্রধান আসামী আদরকে বাদ দিতে প্রভাবশালী মহলের চাপ

চকরিয়ায় আলোচিত আমির হোসেন হত্যার ১৬ দিনেও গ্রেফতার নেই কোন আসামী

স্টাফ রিপোর্টার, চকরিয়া :: কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলা আলোচিত আমির হোসেন হত্যার ১৬দিনেও কোন আসামী গ্রেফতার হয়নি। মামলা নিয়ে তেমন আগ্রহও নেই পুলিশের এমন অভিযোগ আমির হোসেনের পরিবারের। এ অবস্থায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এতে ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন নিহতের পরিবারের সদস্যসহ এলাকাবাসী।

হত্যা মামলার আসামীরা প্রভাবশালী ও সন্ত্রাসী প্রকৃতির হওয়ায় বাদী পক্ষ আতঙ্কে রয়েছেন এমন তাদের পরিবারের দাবী। এমনও অভিযোগ উঠেছে, চার্জশীট থেকে প্রধান আসামীকে বাদ দেওয়ার জন্য নানাভাবে চাপ প্রয়োগ করছেন আসামীপক্ষ।

ডুলাহাজারা ইউনিয়নের ডুমখালী এলাকার নিহত আমির হোসেনের স্ত্রী ও মামলার বাদী ছকিনা ইয়াছমিন বলেন, স্বামী হত্যার ১৬দিন পেরিয়ে গেলেও মূল হত্যাকারীদের এখনো গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। স্বামীকে প্রকাশ্যে হত্যা করেছে চিহিৃত সন্ত্রাসীরা। ছকিনা ইয়াছমিন বলেন, চকরিয়ার এক প্রভাবশালী নেতা মামলা থেকে প্রধান আসামিকে বাদ দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করছেন। এতে মামলাটির ন্যায়বিচার পাওয়া নিয়েও সন্ধিহান নিহত পরিবারের। তারা রয়েছে উদ্বেগ ও উৎকন্ঠায়।

স্থানীয়রা জানান, এলাকাবাসী মনে করছিলো হত্যাকান্ডের দুই একদিনের মধ্যে খুনিরা গ্রেফতার হবে কিন্তু এতোদিনেও খুনিরা গ্রেফতার না হওয়ায় স্থানীয়দের মাঝে নানা সংশয় দেখা দিয়েছে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই গোলাম সরওয়ার বলেন, আমির হোসেন হত্যাকান্ডে জড়িত আসামীদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। বিভিন্ন স্থানে একাধিকবার অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। মামলার যথেষ্ঠ অগ্রগতি হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

মামলার প্রধান আসামীকে বাদ দিতে প্রভাবশালী মহল কর্তৃক বাদীনিকে চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা চন্দন কুমার চক্রবর্তী বলেন, আমির হোসেন হত্যাকান্ডের খুনিদের এখনো ধরাও হয়নি সেখানে বাদ দিবো কিভাবে? মামলার বিষয়ে কোন ধরনের চাপ নেই বলে জানান তিনি। তবে আসামীদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।

জানা যায়, ২৬ মে নিহত আমির হোসেনের স্ত্রী ছকিনা ইয়াছমিন বাদি হয়ে ডুলাহাজারা ইউপি চেয়ারম্যান হাসানুল ইসলাম আদরকে প্রধান আসামি করে ১০ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মামলা দায়েরের পর হত্যাকান্ডের নির্দেশদাতা প্রধান আসামি ইউপি চেয়ারম্যান হাসানুল ইসলাম আদর পলাতক রয়েছেন। আমির হোসেনকে হত্যার দুইদিন পর তাকে প্রকাশ্যে দেখা গেলেও মামলা হওয়ার পরপরই আত্মগোপনে চলে গেছেন বির্তকিত এই চেয়ারম্যান।

ডুলাহাজারা ইউনিয়নের লোকজন জানান, হাসানুল ইসলাম আদর ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে এলাকায় বেপরোয়া হয়ে উঠেন। একের পর এক তার বির্তকিত কর্মকান্ডে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে এলাকাবাসী।

ইউপি চেয়ারম্যান হাসানুল ইসলাম আদর দলীয় প্রতীক নৌকার বিরুদ্ধে নির্বাচন করে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। নির্বাচিত হওয়ার পর ডুলাহাজারা ইউনিয়নে গড়ে তুলেন তার নামে আদর বাহিনী। এমনও অভিযোগ চেয়ারম্যান হওয়ার পর প্রতিপক্ষের লোকজনকে হয়রানীর মাত্রা বেড়ে যায় তার।

ডুলাহাজারা বালুমহাল, পাহাড় নিধন ও বনবিভাগের জায়গা দখল সহ নানা অপরাধের নেতৃত্বে দিচ্ছেন এই আদর বাহিনী। সর্বশেষ ২৩ মে ইউপি চেয়ারম্যান হাসানুল ইসলাম আদরের নেতৃত্বে দিনমজুর আমির হোসেনকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেন। চেয়ারম্যান আদর পলাতক থাকলেও তার বাহিনী ঠিকই ত্রাসের রাজত্ব চালিয়ে যাচ্ছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ ।

পাঠকের মতামত: